বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এর নাম আমরা কম বেশি সবাই জানি ।উনার সেই বিখ্যাত সূত্র

E=mc²

এর কথা আমরা সবাই কম বেশি শুনেছি ।অনেক সময় শুনতাম যে তার এই সূত্র ভুল প্রমাণ করতে গিয়ে অনেকে পাগল হয়ে গেছে ।জানিনা কথাটি কতটুকু সত্যি।এইচ এস সি লেভেল এ এসে এই সূত্রের সাথে পরিচয় ঘটে ।
১৯০৫ সালে প্রকাশিত আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব থেকে জানা যায় যে  “the speed of light is a “cosmic constant” and that nothing in the universe can travel faster.”
কিন্তু জেনেভায় গবেষণাকেন্দ্র সার্নে ‘অপেরা’ নামের একটি পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেলো, পরীক্ষাটিতে নিউট্রিনো নামের একটি কণা আলোর গতির চেয়ে ০.০০২৫ শতাংশ বেশি গতিতে গতিমান ছিল ।নিউট্রিনো কণার গতি প্রতি সেকেন্ড এ ৩০০০০৬ কিঃমিঃ যা আলোর গতির চেয়ে সামান্য বেশি ।
নিউট্রিনো কী,নিউট্রিনোর গতি কেমন ছিল ,প্রজেক্ট অপেরা কি ,পরীক্ষণের নির্ভুলতা কেমন ছিল তা এই খানে মোটামুটি আকারে ধারণা পাওয়া যাবে ।
এই খবরটি সোনার পর মনে হল আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতাতে এক ধরনের বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে ।
কিছুদিন পর বিভিন্ন পত্রিকাতে যে খবরটি বেশি আলোড়িত হয় তা হলো বাংলাদেশ এর দুই বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতাকে পরিপূর্ণ রুপ দিবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ।ওই বিজ্ঞানীদ্বয় হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ওসমান গণি তালুকদার এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অপর অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ।২০ বছর ধরে গবেষণা করে তাঁরা এ সাফল্য পেয়েছেন।এ থেকেই বুঝা যায় যে তাঁরা এই আপেক্ষিক তত্ত্বের উপর অনেক গবেষণা করেছেন ।বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মতবাদ অনুসারে কোন বস্তুর গতি আলোর চেয়ে বেশি হতে পারে না।এ বিষয়ে আইনস্টাইন দিয়ে গেছেন পাঁচটি সমীকরণ এবং একটি মৌলিক ধ্রুবসংখ্যা।আইনস্টাইনের এ মতবাদ ছিল অসম্পূর্ণ। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে তাঁরা নানাভাবে প্রমাণ পেয়েছেন যে, বস্তুর গতি আলোর গতির চেয়ে বেশি হতে পারে। বস্তুর গতি যে আলোর গতির চেয়ে বেশি হতে পারে এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ ও
সহকারে ২০০১ সালে ওসমান গণি তালুকদার An Alternative Approach to the Relativity নামে একটি বইও প্রকাশ করেন।বইটি প্রকাশ করার আগে তাঁরা উভয়েই এ বিষয়ের ওপর লেখা কিছু গবেষণা প্রবন্ধ দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু দৃশ্যত আইনস্টাইনের তত্ত্বের বাইরে যাওয়া যাবে না ভেবেই বিদেশের কোনো জার্নাল তাঁদের প্রবন্ধ প্রকাশ করেনি। অধ্যাপকেরা উল্লেখ করেন, বইটি প্রকাশ করার আগে ২০০১ সালের ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেওয়া হয়, নিউট্রিনো নামের বস্তুকণিকা আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের মতবাদ লঙ্ঘন করে, অর্থাৎ নিউট্রিনো আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলে। তাঁরা বলেন, এ বিষয়ে তাঁদের নির্ণীত তিনটি সমীকরণের মধ্যে দুটি সমীকরণ সংবলিত একটি প্রবন্ধ কানাডার একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছেন, যা প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রধানত সার্নের বিজ্ঞানীদলের ফলাফল বাংলাদেশ এর দুই বিজ্ঞানীকে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সেই মতবাদকে সম্পূর্ণতাদান বা সম্প্রসারিত করার।তা না হলে কখনই সুযোগ আসতো না বাংলাদেশ এর এই দুই বিজ্ঞানীর। সার্নের ওই গবেষক দল এখন পর্যন্ত কোন সমীকরণ দাঁড় করাতে পারেনি কিংবা এ সংক্রান্ত কোন মৌলিক ধ্রুব সংখ্যাও নির্ণিত করতে পারেনি। সার্নের গবেষকদের এ ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হয় চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর।
এর আগে থেকেই তাঁরা (অধ্যাপক ওসমান গণি তালুকদার ও অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ) সংবাদ সম্মেলন করে, বই প্রকাশ করে এবং প্রবন্ধ লেখাসহ নানাভাবে ঘোষণা দিয়ে আসছেন যে, বস্তুর বেগ আলোর বেগের চেয়ে বেশি হতে পারে এবং এ সংক্রান্ত নতুন সমীকরণ দাঁড় করানোসহ কিছু মৌলিক ধ্রুব সংখ্যাও আবিস্কার করেছেন ।
দুই অধ্যাপক বলেছিলেন, আগামী ডিসেম্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনের আয়োজন করে নতুন এ তিনটি সমীকরণ ও মৌলিক ধ্রুবসংখ্যা আবিষ্কারের বিষয় উন্মোচন করা হবে। বিজ্ঞান সম্মেলনটি আয়োজনের ব্যবস্থা করতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
তবে কিছু ঘটনা যা না বললেই নয় ।কাগজে কলমে আমরা সবাই জানি মার্কনিরেডিও আবিষ্কার করেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে মার্কনির রেডিও আবিষ্কারের কয়েক বছর আগে তা আবিষ্কার করেছিলেন বাঙালি বিজ্ঞানি জগদীশ চন্দ্র বসু
এক সাক্ষাৎকারে মার্কনিকে প্রশ্ন করা হয়:” আপনার এই আবিষ্কারে অবদান রাখার জন্য জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম ও শোনা যায়। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন ?
মার্কনি উত্তরে বলেন ,“আমি বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তার মানে হচ্ছে জন্ম থেকেই ভাগাভাগির ব্যাপারটা আমার মধ্যে ছিল। এই যে ১৯০৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ পেলাম, সেটাও পল ফার্ডিন্যান্ড এর সাথে যৌথভাবে পেয়েছি। তাই আবিষ্কারের ব্যাপারটাও ধর জগদীশ চন্দ্র বসুর সাথেই না হয় ভাগ করলাম। তবে সেটা আমি সবার সামনে স্বীকার করতে চাই না।”
মার্কনিকে আবার প্রশ্ন করা হয় ,“আপনি স্বীকার না করলেও এই পেটেন্টের ব্যাপারটাতো আদালত পর্যন্ত গিয়েছিল।”
উত্তরে মার্কনি বলেন ,“ জগদীশ বসু খুবই ভাল মানুষ ছিলেন। তাই তিনি এই মামলায় জড়াননি। অন্য যারা রেডিও আবিষ্কারের দাবিদার ছিল তাদের আমি খুব সহজেই মামলায় হারিয়েছি। কারণ তারা সবাই ছিলেন বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানের পাশাপাশি তারা আমার মত রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। সেই কারণে মামলা মোকদ্দমার বিষয়গুলিও ভাল বুঝতেন না।”
কলেরা এবং ডায়রিয়ার খাবার স্যালাইন যেটি প্রতি বছর হাজার হাজার জীবন বাঁচায় তার আবিস্কারক একজন বাঙালী । নাম হেমেন্দ্র নাথ চ্যাটার্জী । কিন্তু বিশ্বজুড়ে সবাই জানে ওরাল স্যালাইনের আবিস্কারক দুজন পশ্চিমা বিজ্ঞানী ‌,ডেভিড নেলিন এবং ক্যাশ ।
এই রকম শিকার আরও অনেক বাঙালি বিজ্ঞানী যা বাঙালি বিজ্ঞানীদের জন্য সুখের খবর নয় ।
যদিও আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতাকে পরিপূর্ণ রুপ দিবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া দুই বিজ্ঞানীর খবরটি একটু পুরাতন ।৮ অক্টোবর বিভিন্ন পত্রিকায় এই ব্যাপারে খবর ছাপা হয়েছিল ।কিন্তু এর পরে এ বিষয়ে আর কোন খবর না আসাতে মনে প্রশ্ন জাগে আগামী ডিসেম্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলন কি হবে? বাংলাদেশ এর ২ বিজ্ঞানী কি পারবেন ইতিহাস হতে?আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের অসম্পূর্ণ মতবাদ সম্পূর্ণকরণ ;তাও যদি হয় বাংলাদেশ এর বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে তাইলে ব্যাপারটা আসলেই খুব গর্বের ।বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ তাঁদের এই ২০ বছরের পরিশ্রমের ফসলকে বাস্তবায়ন করতে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়া ।যার ফলে নতুন প্রজন্ম তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হবে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনীয় চিন্তা ধারায় বিকশিত হবে ।যার ফলে বাংলাদেশ অনেক দূরে এগিয়ে যাবে ।